শামসুল আলম শারেক , টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি।
কক্সবাজার টেকনাফে উপজেলা মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১২আগস্ট) সকালে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আদনান চৌধুরীর সভাপতিত্বে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয় । বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে এই প্রথম উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির কোন সভায় সকল রাজনৈতিক দলের ও ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে স্বাধীনভাবে তাদের মতামত উপস্থাপন করতে পেরেছেন। তবে সকলের কন্ঠে সমান ভাবে ভেসে উঠে দেশে ৫ আগস্ট হতে চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির ব্যাপকভাবে অবনতি হয়েছে। যার কারণে মাদক কারবারি, সন্ত্রাসী ও বন্দুক ধারীরা বেপরোয়া হওয়ায় সাধারণ জনগণের মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক। প্রতিটি এলাকা হতে তাদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি ছিল দল-মত নির্বিশেষে সকলের কন্ঠে।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ ওসমান গনি বলেন , দেশে চলমান পরিস্থিতির মধ্যে টেকনাফে কিছুটা আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে সেটা আমাদের সবার নজরে আসছে ।
ইনশাল্লাহ আগামীতে সকল রাজনৈতিক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করে টেকনাফের আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। আমি আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। চলমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে যারা লুটপাট করেছে, অন্যায় করেছে, তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডের তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যারা মাদক, অস্ত্র ও ডাকাতি করে জনগণের জান মালের ক্ষতিকারক কাজে লিপ্ত থাকবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনাহবে।
ইউএনও আদনান চৌধুরী বলেন, অন্যান্য উপজেলার চেয়ে আমাদের টেকনাফ অনেকটা ভালো আছে । এ ধারা বজায় রাখতে আমি ছাত্র সমাজ সহ সকলের সহযোগিতা চাই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে সকলের সম অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। যদি তা না করে টেকনাফে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান তাহলে আমি টেকনাফ ছেড়ে চলে যেতে বাদ্য হব।
টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ জানান, অতীতে যা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে আর কোন বাড়াবাড়ি নয়। আমরা পরিষদের দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র মাস হয়েছে। কে কোন দলের বা মতের সেটা না দেখে সবার সাথে বিভেদ ভুলে কাজ করব। তবে কেউ যেন সুযোগ সন্ধানী হয়ে মানুষকে হয়রানি করতে না পারে সেদিকে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে বলে ইঙ্গিত করেন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২বিজিবির) উপ-অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক আহম্মদ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কে কোন দলের বিবেচনা করার সূযোগ নেই, যে অপরাধের সাথে জড়িত হবেন তাকে ছাড় দেবনা। সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদা তৎপর আছে। তবুও যদি অনুপ্রবেশ ও চোরাচালানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে পারলে অবশ্যই আমরা দ্রুত অভিযান করব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখছেন, , টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সৈয়দ সাফকাত আলী, পৌর মেয়র হাজী মোঃ ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ /মহিলা) সরওয়ার আলম, মরজিনা আক্তার সিদ্দিক, হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী, হোয়াইক্যং ইউপির চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা জামায়েতের আমির অধ্যক্ষ নুর আহম্মদ আনোয়ারি, বাহার ছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন, টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য সুলতান আহাম্মদ বিএ, টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ নুরুল আমিন চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আলী মেম্বার, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম,
বাংলাদেশ জমায়েত ইসলামী টেকনাফ উপজেলা শাখার আমির নূর হোসেন সিদ্দিকী, সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিক উল্লাহ, ছাত্র শিবিরের টেকনাফ উপজেলা সভাপতি মোঃ তারেক, হ্নীলা বাজার ইজারাদার এডঃ রশিদুল আলম চৌধুরী ও রফিকুল আলম চৌধুরী, যুবদল নেতা জামাল উদ্দীন , আব্দুল্লাহ বিন কাদের, সওকত আলী, বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেম্বার, সাংবাদিক সহ সরকারি কর্মকর্তা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক গণ।