গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় পার্কের প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন ও পদত্যাগের দিন হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই পার্কটি পর্যটকদের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।পার্ক কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হামলাকারীরা।ফটকটির উপরে ঢালাই করে লেখা বঙ্গবন্ধু নামের অংশটি ভেঙে ফেলা হয়। প্রধান ফটকের ভেতরে ঢুকেই সামনে থাকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটিও খোদাই করে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। পরে গ্যারেজে পার্কিং করা একটি পর্যটক বহনকারী একটি বাস, দুইটি জিপ ও ৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। ডিসপ্লে ম্যাপটিও ভাঙচুর করে।এছাড়া পার্ক অফিসের জানালার কাচ, ফ্যান ও কম্পিউটার, প্রিন্টার, পিসি, স্ট্যান্ডফ্যান, ওয়ালফ্যান, সিলিংফ্যান ভেঙে ফেলে। লুট করেছে সেখানে থাকা ল্যাপটপটিও। ডরমিটরি ভবন, রেস্টহাউস ময়ুরী ও ঐরাবতী, ফুডকোর্ট-১ ও ২, শিশুপার্ক, মিউজিয়াম, প্রজাপতি কেন্দ্র, পার্ক অডিটোরিয়াম, কৃত্রিম উপায়ে পাখির ডিম ফুটানোর ইনকিউবেটর কক্ষে ভাঙচুর ও লুটপাট করে হামলাকারীরা। ফুডকোর্টে থাকা বিভিন্ন কোমলপানীয়, বোতলজাত পানি, চিপস, বিস্কুট, আইসক্রিম লুট এবং ফ্রিজ, গ্লাসসহ বিভিন্ন মালামাল তছনছ ও ভাঙচুর করা হয়েছে।অডিটোরিয়ামের জানালা-দরজার কাচ ভাঙচুর এবং সাউন্ড সিস্টেম লুট করা হয়েছে।মিউজিয়ামে সংরক্ষিত মৃত প্রাণী, মাছ, এবং পাখির নমুনাও ভাঙচুর করা হয়েছে। পার্কের ইনকিউবেটর রুমে থাকা ২টি ময়ূর ছানা এবং বিভিন্ন জাতের ৮টি টিয়া পাখি চুরি গেছে। হামলাকারীরা অজগরের বেষ্টনী ভেঙে দিলে তিনটির মধ্যে দুটি সাপ পালিয়ে যায়।বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই হামলার ফলে পার্কটির বিশাল ক্ষতি হয়েছে।হামলাকারীরা মূল সাফারি পার্কের হিংস্র প্রাণীর এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করলেও প্রাণীর নিরাপত্তার কারণে তা থেকে বিরত থাকে।হামলার পর থেকে পার্কটি বন্ধ থাকায় কোনো আয় নেই, কিন্তু প্রাণীগুলির খাদ্যের জন্য প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা খরচ হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৪-৫ লাখ টাকা আয় হতো পার্ক থেকে। বর্তমানে পার্ক মেরামত কাজের পরই এটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সরকারের পতন আন্দোলনের কারণে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হচ্ছে।