শামসুল আলম শারেক, টেকনাফ ( কক্সবাজার):
কক্সবাজার জেলার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে হ্নীলায় নাফনদী খুলে দেয়ার দাবীতে মানব বন্ধনও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৪ আগষ্ট দুপুর ২ টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা মৌলভীবাজার স্টেশন ও নাফনদীর জিরোপয়েন্ট বেড়িবাঁধ এলাকায় হ্নীলা ইউনিয়নের প্রায় ৭ শতাধিক জেলেদের এই মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলেদের দাবী গত ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা আসার পর থেকে ইয়াবা অনুপ্রবেশের দায়ে সীমান্ত বিজিবি নাফনদীতে জেলেদের মাছধরা বন্ধ করে দেয়।বিগত ৭ বছরের মাথায় এই বছরের প্রথম দিকে শুধু মাত্র হ্নীলা ইউনিয়ন ছাড়া বাকী সব ইউনিয়ন সংশ্লিষ্ট নাফনদীতে মাছ ধরা খুলে দিলেও কোন অদৃশ্যশক্তির বলে উপরের দোহায় দিয়ে বিজিবি প্রশাসন নাফনদীর হ্নীলা সীমান্ত বন্ধ রাখে। এতে করে প্রায়ই ৭ বছর যাবত জেলে পরিবার গুলো অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে তাদের যে ছেলে বেলেরা পড়া লেখা করত তাও বন্ধ হয়ে গেছে। এইভাবে জীবন জীবিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলে পরিবার গুলোর দৈনন্দিন জীবন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য গতকাল ১৩ আগস্ট মৌলভীবাজার এলাকার মাস্টার আমান উল্লাহ জামায়াত নেতা মাওঃ ইব্রাহিমের নেতৃত্বে একদল জেলে প্রতিনিধি দল কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যায়।কেন দীর্ঘ প্রায়ই ৮ বছর যাবত নাফনদীর হ্নীলা সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে জেলেরা মাছ ধরতে পারছেনা এ বিষয়ে জানতে চায়। তার উত্তরে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহিন ইমরান বলেছেন ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আসার কারণে তাদের সাথে অবৈধ মাদক ও অস্ত্র যাতে ঢুকতে না পারে তার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ২ মাসের প্রজ্ঞাপন জারী করে নাফনদী বন্ধ করে দেয়। এছাড়া আর কিছু নয়।
উক্ত ২ মাসের প্রজ্ঞাপন কে পুঁজি করে সীমান্তএলাকার সহজ সরল জেলে পরিবার গুলোকে সীমান্ত বিজিবি প্রশাসন দীর্ঘ প্রায়ই ৮ বছর যাবত মাছ ধরা কার্জক্রম থেকে সীমান্তের গরীব জেলেদের বৈষম্যমুলক ভাবে বঞ্চিত রেখেছেন বলে দাবী তুলেছেন তারা।
মানব বন্ধনে তারা আরো বলেছেন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে জেলেরা মাদক এনেছে এই রকম কোন নজির নেই।নাফনদীতে জেলে উঠা নামা বন্ধ করে দিয়ে রাতের আধাঁরে রোহিঙ্গা উঠা নামার সুযোগ দিয়ে একজন বার্মাইয়া রফিক দিয়ে বাহিনী সৃষ্টি করে হ্নীলা সীমান্ত এলাকাকে মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করে রেখে ছিল সংশ্লিষ্টরা। তাদের এই অপকর্ম ফাঁস হবে বলে পরিকল্পিত ভাবে জেলেদর নাফনীতে মাছ ধরা বন্ধ করে রেখে ছিল কৌশলে।
তাদের প্রশ্ন চলতি বছরের শুরুর দিকে শুধু হ্নীলা ছাড়া বাকী সব এলাকায় মাছ ধরা উম্নোক্ত করে দিলেও হ্নীলা কেন বন্ধ রাখা হয়? সকল মাদক কি শুধু হ্নীলা সীমান্ত দিয়ে আসে? তা নাহলে এত বৈষম্যমূলক আচরণ কেন? বর্তমান বৈষম্যের জিঞ্জির থেকে পুরো জাতি কে মুক্তি দিতে যে সরকার নতুন ভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে এই সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন হ্নীলা এলাকার প্রায়ই ৭ শতাধিক কার্ডধারী জেলে সম্প্রদায়। তারা বৈষম্যের এই জিঞ্জির থেকে মুক্তি চায়।
উল্লেখ্য যে,উক্ত মানববন্ধনে হাজারাধিক জেলে,জনসাধার ও সূশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।