মোঃ শামীম আহমেদ,আশুলিয়া (ঢাকা):
বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ শতাংশ করার দাবীতে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় কর্মবিরতি পালন করছে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। ঘটনায় অন্তত ১৫টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুঁটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। অনেক কারখানা খোলা রাখলে ও ডিউটি হয়নি গেটের ভিতর ডুকে আবার আধা ঘণ্টা পরে চলে আসছে। কাজে যোগ দেয়নি গেটে গেটে চলছে কানা গসা।
বুধবার সকাল ৯ টায় পর্যায়ক্রমে এসব কারখানা সাধারণ ছুঁটি ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকালে ও কারখানা গেলে শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে গেটের ভিতর যেয়ে আবার বের হয়ে আসে কেউ কেউ গেটের সামনে থেকে রাস্তায় থেকে ফিরে আসে।
এদিকে হামীম গ্রুপ, শারমীন গ্রুপ, মেডলার এপারেন্স, হামীম নেক্সট কালেকশন, আল মুসলিম ও সেতারা গ্রুপ, বানদো ডিজাইন, সাদাদিয়া, আন্জুমান সহ বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছেন। পরে বেশ কয়েকটি কারখানায় সাধারণ ছু্ঁটি ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে নাসা ও ট্রাউজার লাইন পোশাক কারখানা শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। বান্দো ডিজাইন কারখানাও সাধারণ ছুঁটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া হামীম ও নিট এশিয়ার শ্রমিকেরা এরইমধ্যে কারখানা থেকে বেরিয়ে গেছে। নিউ এজ, ডেকো, আল মুসলিম, এথিকাল সহ আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে কর্ম বিরতি পালন করছেন।
শিল্প পুলিশ জানায়, শ্রমিকেরা বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা করছেন না। তবে বর্ধিত বেতনে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট না। তাদের ১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের দাবি। তাই শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ রেখেছেন। অনেক শ্রমিক আবার কারখানা থেকে বের হয়ে গেছেন।
এ ছাড়া কাজ বন্ধ করে শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করায় ঘোষণা অনুযায়ী বন্ধ রয়েছে আরও কিছু কারখানা। যদিও এখন পর্যন্ত বন্ধ থাকা এ কারখানা গুলোর সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে গতকাল মঙ্গলবার, বুধবার শ্রমিকদের কর্মবিরতির মুখে আশুলিয়ার অন্তত ১০টি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
শ্রমিক নেতা মোঃ জাহিদ বলেন, সম্প্রতি ৪ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বাড়িয়ে ৯ শতাংশ করেছে সরকার। বছরের শুরুতেই এই ইনক্রিমেন্ট পাবে বলে জানা গেছে। সেজন্য শ্রমিকদের উচিত হবে কলের চাকা সচল রাখা এবং তৃতীয় পক্ষ কারো ফাঁদে পা না দেয়া। দেশের পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করে উৎপাদন অব্যাহত রেখে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা। যদি কোন শ্রমিক উস্কানির ফাঁদে পা দেন তাহলে সেই দায়িত্ব তার নিজেরই নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশের শিল্প বাচাতে, দেশের শ্রমিক বাঁচাতে এবং দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য তৃতীয় পক্ষ কারো প্ররোচনায় না পরে শ্রমিকরা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে কারখানার উৎপাদন অব্যাহত রাখবেন বলে শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক মো: মমিনুল ইসলাম ভুইয়া জানান, শ্রমিকেরা কারখানায় প্রবেশ করে কর্মবিরতি পালন করায় অন্তত ১৫ টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকেরা মূলত বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট নন, তাই তারা কাজ বন্ধ করে বসে আছেন। তবে কোনো অরাজকতা কিংবা বিশৃঙ্খলা তারা করছেন না বলেও জানান তিনি।
পুলিশের পাশা পাশি সেনাবাহিনী, আনসার বাহিনী, র্্যাব বাহিনী সহ কারখানা সামনে,রাস্তায়, মোড়ে মোড়ে, অবস্থান করছে যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয়।